পরিবার কেন্দ্রিক নিয়োগ, ৩৮ বছর বয়সেও উত্তীর্ণ প্রার্থী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠছে। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. মাইনুল হাসান বলেন, ফলাফলের তালিকায় প্রশাসনের উচ্চপদস্থ ব্যক্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ছেলে, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের জামাতা, উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী-২ এর স্ত্রীসহ অনেকে প্রথম সারিতে রয়েছেন। এছাড়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারিত থাকলেও বিদ্যুৎ কুমার সূত্র ধর নামে এক প্রার্থীর বয়স ৩৮ বছর হলেও এ প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার নিয়োগ পরীক্ষায় বেশকিছু অসংগতির কথা উল্লেখ করে এ পরীক্ষা বাতিল ও পুনঃপরীক্ষাসহ বেশকিছু দাবি জানিয়ে আন্দোলন করেছেন নিয়োগ প্রার্থীরা।
ডা. মাইনুল হাসান বলেন, গত ৬ মাস আগে বিএসএমএমইউতে বিতর্কিত প্রশ্নপত্রে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, পরীক্ষার নির্ধারিত দিনের চারদিন আগে পরীক্ষার নিয়ন্ত্রকের উপস্থিতিতে একটি কক্ষে প্রশ্নপত্র খোলা হয়। এখানে বিতর্কিত প্রার্থীদের প্রশ্নপত্র দেখানো হয়। এ ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ও ইলেকট্রনিক্স ডিভাইজ ব্যবহারের মাধ্যমে উত্তরপত্র সরবরাহের ঘটনা ঘটে।
ডা. মাইনুল হাসান আরো জানান, অনিয়ম স্বজনপ্রীতির এ নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে পুনঃনিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা না হলে পরবর্তীতে আন্দোলনসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হবে।
প্রেস ক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, পরিবার কেন্দ্রিক নিয়োগ প্রকিৃয়ার অংশ ছাড়া আমরা এটাকে আর কিছু মনে করছি না। তবে বিএসএমএমইউ প্রশাসন তাদের এ অবৈধ আয়োজন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় হয়েছে বলে মিথ্যা বানোয়াট নাটক সাজিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনও এ ধরনের অনৈতিক কাজে সায় দিতে পারেন না। বরং দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচন করাই তার কাজ বলে আমরা মনে করি। তাই এই প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ পরীক্ষা অবিলম্বে বাতিল করে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার দাবি জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, গত ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত ২০০ জন মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল গত রোববার প্রকাশিত হয়। ১৮০ জন মেডিকেল অফিসার ও ২০ জন ডেন্টাল চিকিৎসক পদে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ৮ হাজার ৫৫৭ জন চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন। লিখিত পরীক্ষায় ১ পদের জন্য ৪ জনকে পাস করানো হয়। এ হিসাবে ৭১৯ জন মেডিকেল অফিসার ও ডেন্টালের ৮১ জন মিলে মোট ৮২০ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। চূড়ান্ত নিয়োগের লক্ষ্যে তাদের ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হবে।